Families are made in the heart

There is no such thing as a “broken family.” Family is family, and is not determined by marriage certificates, divorce papers, and adoption documents. (Note: This Blog is available for sale with all of its content. Kindly contact here if interested with your best offers.)  Families are made in the heart. The only time family […]

Families are made in the heart

Families are made in the heart

There is no such thing as a “broken family.” Family is family, and is not determined by marriage certificates, divorce papers, and adoption documents. (Note: This Blog is available for sale with all of its content. Kindly contact here if interested with your best offers.)  Families are made in the heart. The only time family […]

Families are made in the heart

Families are made in the heart

There is no such thing as a “broken family.” Family is family, and is not determined by marriage certificates, divorce papers, and adoption documents. (Note: This Blog is available for sale with all of its content. Kindly contact here if interested with your best offers.)  Families are made in the heart. The only time family […]

Families are made in the heart

About Bangladesh



Bangladesh abound in River and green 
 Bangladesh is one of the few countries in South Asia, which remains to be explored. Bangladesh has a delicate and distinctive attraction of its own to offer and it is definitely not a tourist haunt like Nepal or India. Bangladesh is like a painter’s dream come true with a rich tapestry of colors and texture. The traditional emphasis of the tourist trade has always been on the material facilities offered by a country rather than on its actual charms. This may be a reason why Bangladesh has seldom been highlighted in the World’s tourist maps. 

It’s a land of enormous beauty, hundreds of serpentine rivers, crystal clear water lakes surrounded by ever green hills, luxuriant tropical rain forests, beautiful cascades of green tea gardens, world’s largest mangrove forest preserved as World Heritage, home of the Royal Bengal Tiger and the wild lives, warbling of birds in green trees, wind in the paddy fields, abundance of sunshine, world’s longest natural sea beach, rich cultural heritage, relics of ancient Buddhist civilizations and colorful tribal lives, – Bangladesh creates an unforgettable impression of a land of peace.

You’ll appreciate our culture and the environment. These are not simply sight-seeing excursions, but real-time learning experiences. Enjoy an ideal blend of adventure and exploration with comfort and relaxation. Here you find that you are not alone. With us, any place in Bangladesh is a home away from home.
 Bangladesh Information



Official Name 
The People’s Republic Of Bangladesh.


Capital 
Dhaka (Area 414 sq. km. Master plan 777 sq.km.)


Currency 
Currency unit is Taka. Notes are of 1,2,5,10,20,50,100 and 500 Taka. 
Coins are of 1,5,10,25,50 and 100 Poisha (100 Poisha = 1 Taka) 


Language 
Bangla is the state language. English is also widely spoken and understood. Arabic is read and spoken for religious purposes.Population 
Total estimated population 130 million. 


Religions 
Muslim 88.3%, Hindu 10.5%, others 1.2%. 


Area 
» Total: 144,000 sq km. 
» Land: 133,910 sq km. 
» Water: 10,090 sq km. 


Location 
Latitude from 20 degree 34′ to 26 degree 38′ north. Longitude from 88 degree 01′ to 92 degree 41′ east. 


Boundary 
Bounded by India from the north, east and west, Burma from the south-east and the Bay of Bengal from the south. 


Climate 
Tropical; cool, dry winter (October to March); hot, humid summer (March to June); cool, rainy monsoon (June to October). 


Rainfall 
Lowest 47″ and highest 136″. 


National Days 
» National Martyrs Day ( February 21) 
» Independence Day ( March 26 ) 
» Victory Day ( December 16) 


Principal Rivers 
Padma, Meghna, Jamuna, Brahmaputra, Madhumati, Surma and Kushiara. 


Principal Crops 
Rice, jute, tobacco, tea, sugarcane, vegetables, potato, pulses, etc. 


Fruits 
Mango, banana, pineapple, jack-fruit, water-melon, green coconut, guava, lichis, etc. 


Major Industries 
Jute, sugar, paper, textiles, fertilizers, cigarette, cement, steel, natural gas, oil-refinery, newsprint, power generation, rayon, matches, fishing and food processing, leather, soap, carpet, timber, ship-building, telephone, etc. 


Airports 
Zia International Airport, Dhaka, Chittagong International Airport, Sylhet International Airport and domestic airports at Jessore, Sylhet, Cox’s Bazar, Rajshahi and Saidpur. 


Sea Ports 
» Chittagong 
» Mongla. 

Tourist Interests 
Longest sea beach, colorful tribal life, centuries’ old archeological sites, the Sundarbans (home of the Royal Bengal Tigers and spotted deer), largest tea gardens, interesting riverine life, etc.

মৃত্যু যেখানে মধুর


৬২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২রা হিজরী সনের কথা। ইসলামী রাষ্ট্র তখন সবেমাত্র শিশু। একজন আরব শেখ নবীর (সা) কাছে এক দূত পাঠিয়ে বললেন, “আমার দলের লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে উৎসুক, কিন্তু এখানে উপযুক্ত কোন ধর্ম প্রচারক নেই। আপনি যদি কয়েকজন জ্ঞানী ব্যক্তিকে এই উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেন তবে আমরা বিশেষ বাধিত হবো।”আল্লাহর রাসূল (সা) কয়েকজন ধর্ম প্রচারক পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা আরব শেখের অঞ্চলসীমায় পৌছামাত্র সেখানের কয়েকজন গোত্রপতি দলবল নিয়ে তাঁদের ঘিরে ফেললো এবং হয় আত্মসমর্থণ নয় তো মৃত্যু এ দুটোর মধ্যে যে কোন একটা বেছে নিতে বললো। খন্ড যুদ্ধ হল। একে একে অনেকেই শহীদ হলেন। বন্দী হলেন খুবাইব (রা)। তাঁকে তুলে দেয়া হলো মক্কার কুরাইশের হাতে। নৃশংসতম উপায়ে তাঁকে হত্যা করা হবে ঠিক হলো। নির্দিষ্ট দিনে খুবাইবকে বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হলো। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার জন্য তিনি শেষ অনুরোধ জানালেন। অনুমতি পেয়ে তিনি একটু তাড়াতাড়ি নামায শেষ করলেন। তারপর উপস্থিত সকলকে লক্ষ্য করে বললেন, “জীবনের শেষ নামায একটু দীর্ঘতর করতেই মৃত্যু পথযাত্রীর ইচ্ছা হয়। কিন্তু আমি তা অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ করলাম, পাছে তোমরা মনে কর আমি ভীত হয়ে কালহরণ করছি।” বধ্যমঞ্চে পাঠাবার পূর্বে তাঁকে শেষবারের জন্য বলা হলো, “এখনও সময় আছে ইসলাম ত্যাগ করে আবার এক নব জীবন লাভ কর।” ধীর শান্ত ও দৃঢ় স্বরে খুবাইব বললেন, “অসত্যের পথে বেঁচে থাকার চাইতে মুসলমান

 হয়ে মৃত্যু বরণ করা শতগুণে শ্রেয়। ইসলামে আত্মসমর্পিত জীবনই আমার কাছে সর্বাধিক মুল্যবান।” উঁচু বধ্যমঞ্চে পদক্ষেপে খুবাইব উঠে গেলেন। চার দিক থেকে নির্মম ভাবে বর্শা ও তীর বর্ষিত হতে লাগলো। নির্ভীক খুবাইব নির্বিকার চিত্তে হাসিমুখে রক্তদান করলেন, শহীদ হলেন। দেহ পড়ে রইলো-মৃত্যঞ্জয়ী অমর আত্মার যাত্রা শুরু হলো-লোক হতে আনন্দলোক।

সত্যাশ্রয়ী মানুষ যাঁরা জীবন মৃত্যু তাঁদের পায়ে ভৃত্য। তাই তাঁরাই বহন করেন সত্যের আলো, সত্যের পতাকা। প্রেরণার আগুন হয়ে ছরিয়ে পড়েন প্রাণে প্রাণে, সৃষ্টি করেন নব নব প্রাণলোক।


‘আমি ঠকিনি বন্ধু’


মক্কার ধনী উমাইয়া।ধনে-মনে সব দিক দিয়েই কুরাইশদের একজন প্রধান ব্যক্তি সে। প্রাচুর্যের যেমন তার শেষ নেই, ইসলাম বিদ্বেষেও তার কোন জুড়ি নেই। শিশু ইসলামকে ধ্বংসের কোন চেষ্টারই সে কোন ত্রুটি করে না। এই ঘোরতর ইসলাম বৈরী উমাইয়ার একজন ক্রীতদাস ইসলাম গ্রহন করেছে। তা জানতে পারল উমাইয়া। জানতে পেরে ক্রোধে ফেটে পড়লো সে। অকথ্য নির্যাতন সে শুরু করলো। প্রহারে জর্জরিত সংজ্ঞাহীন-প্রায় ক্রীতদাসকে সে নির্দেশ দেয়, “এখনও বলি, মুহাম্মাদের ধর্ম ত্যাগ কর। নতুবা তোর রক্ষা নেই।”

কিন্তু তার ক্রীতদাস বিশ্বাসে অটল। শত নির্যাতন করেও তাঁর বিশ্বাসে বিন্দুমাত্র ফাটল ধরানো গেল না। ক্রোধে উন্মাদ হয়ে পড়লো উমাইয়া। শাস্তির আরো কঠোরতর পথ অনুসরণ করল সে।

একদিনের ঘটনা। আরব মরুভূমির মধ্যাহ্ন। আগুনের মত রৌদ নামছে আকাশ থেকে। মরুভূমির বালু যেন টগবগিয়ে ফুটছে। উমাইয়া তার ক্রীতদাস্কে নির্দয় প্রহার করল। তারপর তাকে সূর্যমুখী করে শুইয়ে দেওয়া হল। ভারি পাথর চাপিয়ে দেওয়া হল বুকে। ক্রীদাসের মুখী কোন অনুনয়-বিনয় নেই। মনে নেই কোন শংকা। চোখে কোন অশ্রু নেই, মুখে কোন আর্তনাদও নেই। উর্ধমুখী তাঁর প্রসন্ন মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে আল্লাহর প্রসংসা ধ্বনি-‘আহাদ’, ‘আহাদ’।

ঐ পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন হযরত আবু বকর (রা)। ‘আহাদ’ ‘আহাদ’ শব্দ তাঁর কানে গেল। অনুসন্ধিৎসু হয়ে শব্দ লক্ষ্যে তিনি মরুভূমির বুকে শায়িত ক্রীতদাসের সমীপবর্তী হলেন। উমাইয়াকে দেখে সব ব্যাপারটাই তিনি মনে মনে বুঝে নিলেন। বললেন, “উমাইয়া, আপনাকে তো ধনী ও বিবেচক লোক বলেই জানতাম। কিন্তু আজ প্রমাণ পেলাম, আমার ধারণা ঠিক নয়। দাসটি যদি এতই না পছন্দ, তাকে বিক্রি করে দিলেই পারেন। এমন নির্দয় আচরণ কি মানুষের কাজ ।”

হযরত আবু বকরের ঔষধে কাজ হলো। উমাইয়া বললেন, “এত বাহাদুরী দেখাবেন না। দাস আমার এর উপর সদাচার-কদাচার করবার অধিকার আমারই। তা যদি এতই দয়া লেগে থাকে, তবে একে কিনে নিলেই পারেন।”

হযরত আবু বকর (রা) এই সুযোগেরই অপেক্ষা করছিলেন। তিনি চত করে রাজী হয়ে গেলেন। একজন শ্বেতাংগ ক্রীতদাস ও দশটি স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে কিনে নিলেন কৃষ্ণাংগ ক্রীতদাসকে। হযরত আবু বকর (রা) মরুভূমির বুক থেকে টেনে তুলে গা থেকে ধূলো ঝেড়ে দিলেন। উমাইয়া বিদ্রুপের হাসি হেসে বললেন, “কেমন বোকা তুমি বলত? এ অকর্মন্য ভৃত্যটাকে একটি সুবর্ন মুদ্রার বিনিময়েই বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলাম। এখন আমার লাভ ও তোমার ক্ষতি দেখে হাসি সম্বরণ করতে পারছি না।”

আবু বকর (রা)ও হেসে বললেন, “আমি ঠকিনি বন্ধু! এ ক্রীতদাসকে কেনার জন্য আমার সমস্ত সম্পত্তি দিতে হলেও আমি কুন্ঠিত হতাম না। কিন্তু একে আমি ধারণাতীত সস্তা মুল্যে ক্রয় করে নিয়ে চললাম।”

এ দাসটিই ছিলেন বিশ্ব বিশ্রুত বিলাল। ইসলামের প্রথম মুয়াযযিন হযরত বিলাল।

নামায যুদ্ধ থামিয়ে দিল

আফগানিস্তানের উত্তর পশ্চিমে এক পর্বতময় মালভূমি। তদানীন্তন বলখ ও বাদাখশান রাজ্যের সীমান্ত সন্নিহিত একটি স্থান। ভীষণ যুদ্ধ চলছে দুই দলে। বহু যুদ্ধের মত এটিও ভাইয়ে ভাইয়ে মুসলমানে মুসলমানে আত্মঘাতী এক লড়াই। যুদ্ধমান দু‘পক্ষের এক পক্ষে রয়েছে মোগল বাহিনী, অন্যপক্ষে রয়েছে বলখের সুলতান আযীয খানের সৈন্যদল। মোগল বাহিনীকে পাঠিয়েছেন দিল্লীর সম্রাট শাহাজান তাঁর পিতৃভূমি বলখ-বুখারা-বাদাখশান পুনুদ্ধার করতে। অপর পক্ষে বলখের সুলতান রক্ষা করতে এসেছেন তাঁর রাজ্য। উভয় পক্ষেই কাজ করছে ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠি স্বার্থ, জাতীয় স্বার্থ চিন্তার কোন চিহ্ন কোথাও নেই।

মোগল বাহিনীর পরিচালনা করছেন শাহজাদা আওরঙ্গজেব। আর বলখের সুলতান স্বয়ং তাঁর বাহিনী পরিচালনা করছেন যুদ্ধ ক্ষেত্রে।

ভীষণ যুদ্ধ চলছে। ধীরে ধীরে সূর্য তার আকাশ পরিক্রমায় উঠে এল মধ্য গগনে। মধ্য গগন থেকে সূর্য একটু হেলে পড়ল পশ্চিমে। সেনাপতি শাহজাদা আওরঙ্গজেব মাথা তুলে একবার সূর্যে দিকে চাইলেন। তাঁর চেহারায় পরিবর্তন ঘটল। তিনি হাতের বর্শা ছুড়ে দিলেন মাটিতে। ঘোড়া থেকে নামলেন। কমরবন্ধ খুলে রেখে দিলেন মাটিতে। তার পর জায়নামায বিছিয়েঢ পশ্চিমমুখী হয়ে নামায শুরু করলেন। যুদ্ধ তখন অবিরাম চলছে। বৃষ্টির মত ছুটে আসছে তীর বর্শা। যোদ্ধাদের হুংকার, আহতের আহাজারি, অশ্বের হ্রের্ষা রব এক ভয়াবহ পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। কোন দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই,  জায়নামাযের উপর চোখ দুটি তাঁর যেন আটকে আছে, অখন্ড মনোযোগে নামায আদায় করছেন শাহজাদা। আরঙ্গজেব। শত্রুদের পুরোপুরি দৃষ্টির মধ্যে রয়েছেন তিনি। যে কোন সময় তীর বর্শা ছুটেচ এসে তাঁকে বিদ্ধ করতে পারে কিংবা স্বশরীরে শত্রু তাঁর উপর এসে চড়াও হতে পারে। কিন্তু শাহজাদা আওরঙ্গজেবের সমগ্র চেহারায় এজন্য কোন প্রকার চিত্ত-চাঞ্চল্যের লেশ মাত্র নেই। মনে হচ্ছে তিনি যেন কোন এক বিরল উপত্যকার নীরব নিঝুম পরিবেশে গভীর প্রশান্তিতে নামায আদায় করছেন।

এই অপরূপ অদৃশ্য অশ্বে সমাসীন সুলতান আব্দুল আযীয খান দেখতে পেলেন। তাঁর দৃষ্টি যেন আটকে গেল মহাপ্রভুর সামনে বিনীতভাবে দন্ডয়মান শাহজাদা আওরঙ্গজেবের উপর। হৃদয়টি তাঁর মোচড় দিয়ে উঠলো। শিউরে উঠলো তাঁর গোটাদেহ। কার বিরুদ্ধে, কোন মহান ভাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন তিনি। সুলতান আবদুল আযীয খান চীৎকার করে উঠলেন, “যুদ্ধ অসম্ভব—-যুদ্ধ থামাও —–থামাও যুদ্ধ।”

যুদ্ধ বন্ধ হলো। ব্যক্তি স্বার্থ পেছনে পড়ে গেল, জয়ী হলো জাতীয় স্বার্থ, ভ্রাতৃ সম্পর্ক। ইসলাম যেন মূর্তিমান রূপ নিয়ে এসে দু‘ভায়ের রক্তপাত বন্ধ করলো। প্রমাণ হলো একমাত্র ইসলামই ভাইয়ে ভাইয়ে আপোষ ও ঐক্য প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হতে পারে।

তাওহীদের মহাবাণী গোপন রাখতে পারবো না

হযরত আবুযার আরবের গিফার গোত্রের লোক। মক্কা থেকে অনেক দূরে বাস করেন তিনি। সত্যানুসন্ধি আবুযার শুনলেন মক্কায় একজন নবী আবির্ভূত হয়েছেন।

আবুযার মক্কায় গিয়ে তাঁর সাক্ষাত লাভের মনস্থ করলেন। কিন্তু কুরাইশদের শ্যেন দৃষ্টির সামনে তাঁকে খুঁজে বের করে সাক্ষাত করা নিরাপদ নয়। তবু আবুযার মক্কায় চললেন। সত্যসন্ধানী আবুযারকে সত্য প্রচারকের সাক্ষাত যে পেতেই হবে। মক্কায় গিয়ে তিনদিন মৌন অনুসন্ধানের পর আবুযর মহানবীর (সা.) সাক্ষাত লাভের সৌভাগ্য অর্জন করলেন। নবীর সাক্ষাত পেয়েই সত্যের জন্য পাগল পারা আবুযার ইসলাম গ্রহন করলেন। মহানবী (সা.) আবুযারকে উপদেশ দিলেন, “ইসলাম গ্রহণের কথা গোপন রেখে তুমি নীরবে দেশে ফিরে যাও।”

ইসলাম গ্রহণ করে আবুযার কিন্তু আর স্থির থাকতে পারলেন না। যে সত্য গ্রহণের জন্য এতদিন তিনি পাগল প্রায় ছিলেন, সে সত্য প্রচারের জন্য এতদিন তিনি অস্থির হয়ে উঠলেন। তাঁর মনে কাঁটার মত বিঁধতে লাগলো। ফুল শয্যায় শয়ন করে কাল কাটাবার জন্য আবুযার ইসলাম গহন করেননি কিংবা নিরাপদে মুসলমান হয়ে থাকার বাহবাও তো আবুযরের জন্য নয়। তাহলে আবুযার চুপ করে থাকবে কেন? এই চিন্তা আবুযরকে চুপ থাকতে দিলো না,

স্থির হতে দিলোনা। হযরত আবুযার বিনীতভাবে মহা নবীর (সা) কাছে নিবেদন করলেন, “তাওহীদের মহাবাণী আমি গোপন রাখতে পারবো না, কাফিরদের মধ্যে গিয়ে চেঁচিয়ে তা ঘোষনা করব।”

যে আবুযর কাফিরদের ভয়ে মক্কায় মহানবীর (সা) নাম পর্যন্ত নিতে সাহস করেননি, সকলের চোখ এড়িয়ে গোপনে তিনদিন ধরে যে আবুযর মহানবীকে (সা) খুঁজে ফিরেছেন কালেমা তাওহীদ উচ্চারণের পর সেই আবুযর সমস্ত ভয়-ভীতি, অত্যাচার, এমন কি মৃত্যুভয়ের আশংকাকেও জয় করে নিলেন। কিছুই আর তাঁকে পেছনে টানতে পারলোনা। মহা নবীর (সা) কাছ থেকে হযরত আবুযার ছুতে এলেন কাবার চত্বরে। সেখানে অনেক কুরাইশ জটলা পাকিয়ে বসেছিল। আবুযার কাবা গৃহের সামনে গিয়ে বজ্র নির্ঘোষে ঘোষণা করলেন, “আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। মুহাম্মাদ (সা) তাঁর রাসূল।”

হযরত আবুযারের তাওহীদ ঘোষণা বোধয় কুরাইশদের হৃদয়ে তীরের মত বিদ্ধ হয়েছিল। তারা আহত হিংস্র পশুর মত ছুটে এল আবুযারকে লক্ষ্য করে। সবাই মিলে চারদিক থেকে নির্মম প্রহার শুরু করল তাঁর উপর। আঘাতে আঘাতে আবুযারের দেহ ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেল। রক্তে ভিজে গেল কাপড় চোপড়। ঢলে পড়লেন মাটিতে। তিনি মুমূর্ষ।

সেখানে হযরত আব্বাস উপস্থিত ছিলেন। তিনি তখনও মুসলমান না হলেও ভ্রাতুষ্পুত্র মুহাম্মাদকে (সা) অত্যন্ত ভালবাসতেন। তিনি মুমূর্ষু আবুযারের দেহকে নিজের দেহ

 দিয়ে আড়াল করে উন্মাদ প্রায় কুরাইশদের বলতে লাগলেন, “কি সর্বনাশ! এ যে গিফার গোত্রের লোক। সিরিয়া যাওয়ার পথেই এদের নিবাস। এর এভাবে মৃত্যু হলে সিরিয়ার ব্যবসা বাণিজ্য করার পথই যে আমাদের বন্ধ হয়ে যাবে।” একথা শুনে কুরাইশদের সম্বিত ফিরে এলো। তাদের মনে হলো, আব্বাস তো ঠিকই কথা বলেছেন। তারা আবুযরকে ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়াল। এ অমানুষিক নিপীড়ন হযরত আবুযরকে সত্যের প্রচার থেকে বিরত রাখতে পারেনি। এই ঘটনার পরও তিনি পরপর দু’দিন কাবার চত্বরে গিয়ে উচ্চ কণ্ঠে তাওহীদের বাণী ঘোষণা করেছেন। অত্যাচার-নিপীড়নেরও পুনরাবৃত্তি হয়েছে। কিন্তু আবুযর সত্যের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সব কিছুকেই মেনে নিয়েছেন হাসি মুখে। অদ্ভুত শক্তি তাওহীদের। মনে প্রানে একবার এ কালেমা পাঠ করলে মানুষের মনে যে শক্তির বন্যা আসে, তার সামনে থেকে জগতের সব অত্যাচার, সব যুলুম আর তার ভয় তৃণ খণ্ডের মত ভেসে যায়।

Islam is above of all

খাব্বাবের আকাংখা

একদম প্রাথমিক পর্যায়ে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন, খাব্বাব তাঁদের মধ্যে একজন। বোধ হয় ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে পাঁচ ছয় জনের পরই তাঁর স্থান হবে। তিনি এক জন মহিলার ক্রীতদাস ছিলেন। মহিলাটি ছিল নিষ্ঠুরতার জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি। যখন সে জানতে পারল খাব্বাব ইসলাম গ্রহন করেছেন, তখন তাঁর উপর নির্মম অত্যাচার শুরু হলো। অধিকাংশ সময় তাঁকে নগ্নদেহে তপ্ত বালুর উপর শুইয়ে রাখা হতো। যার ফলে তাঁর কোমরের গোশত গলে পড়ে গিয়েছিল। ঐ নিষ্ঠুর রমণী মাঝে মাঝে লোহা গরম করে তাঁর মাথায় দাগ দিত।

অনেকদিন পর হযরত উমারের রাজত্বকালে হযরত উমার একদিন তাঁর উপর নির্যাতনের বিস্তৃত বিবরণ জানতে চাইলেন। খাববার তখন বললেন, “আমার কোমর দেখুন।” হযরত উমার কোমর দেখে আঁৎকে উঠে বললেন, “এমন কোমর তো কোথাও দেখিনি?” উত্তরে খাব্বাব খলীফাকে জানালেন, “আমাকে জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর শুইয়ে চেপে ধরে রাখা হতো, ফলে আমার চর্বি ও রক্তে আগুন নিভে যেত।”

এই নির্মম শাস্তি ভোগ করা সত্ত্বেও ইসলামের যখন শক্তি বৃদ্ধি হল এবং মুসলমানদের বিজয় সূচিত হলো, তখন খাববাব রোদন করে বলতেন, “খোদা না করুন আমার কষ্টের পুরষ্কার দুনিয়াতেই যেন লাভ না হয়।”

মাত্র ৩৬ বছর বয়সে হযরত খাব্বাবের মৃত্যু হয় এবং সাহাবাদের মধ্যে সর্ব প্রথম তিনিই কুবায় কবরস্থ হন। তাঁর মৃত্যুর পর হযরত আলী (রা) একদিন তাঁর কবরের পাশ দিয়ে যাবার সময় বলেছিলেন, “আল্লাহ খাব্বাবের উপর রহম করুন। তিনি নিজের খুশীতেই মুসলিম হয়েছিল। নিজ খুশীতেই হিজরত করেছিলেন। তিনি সমস্ত জীবন জিহাদে কাটিয়ে দিয়েছিলেন এবং অশেষ নির্যাতন ভোগ করেছিলেন।”

জাহান্নামে গেলে যেমনি একজন মুসলমানের কষ্ট হবে, তেমনি একজন অমুসলিমেরও কষ্ট হবে। তাই শুধুমাত্র মুসলিমদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে দাওয়াতি কাজ আঞ্জাম দেওয়াটাই যথেষ্ট হতে পারে না। অবশ্যই অমুসলিমদের মাঝেও দাওয়াতি কাজ ব্যাপকভাবে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।অমুসলিম দাওয়াতি অভিযান চলছে। আপনার আশেপাশে কত অমুসলিম আছে, তাদের প্রতি মায়াবী দৃষ্টিতে একটু তাকান, অথবা চোখ বন্ধ করে হৃদয়ের চোখ মেলে তাদের কথা একবার ভাবুন, ঈমান না এনে মৃত্যুবরণ করলে পরকালে তাদের কী দশা হবে, সেটা আমাদের সবার কাছেই স্পষ্ট। অথচ তাকে সে কঠিন পরিণাম থেকে রক্ষার জন্য আমরা সাধ্যের আলোকে চেষ্টা করতে পারি৷ সেটাই আমাদের ঈমানের দাবি। মমত্ববোধের সাথে তাদেরকে দ্বীনের মর্মবাণী বুঝানোর চেষ্টা করতে পারি আমরা। আর আল্লাহর কাছে তাদের হেদায়াতের জন্য দোয়া করতে পারি বিশেষভাবে। হতেও তো পারে, তাকে আপনি সিরাত্বল মুস্তাকিমে হাঁটতে দেখে চোখ জুড়াতে পারবেন!আর ভেবে দেখুন, আমাদের সমাজে ইসলামী রাষ্ট্রের কী অপব্যাখ্যাই না চলমান! অনেকে ধারণা করে বসে আছে, ইসলামী রাষ্ট্রে বোধ হয় অমুসলিমরা থাকতেই পারবে না। অথচ ব্যাপারটা কখনই তেমন নয়। বরং ইসলামী রাষ্ট্রেই একজন অমুসলিম তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তার গ্যারান্টি পাবে। ইসলামী নিয়মবিধান শুধুমাত্র একজন মুসলিমের জন্যই নয়, বরং সকল মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত কল্যাণকর দ্বীন তথা জীবনব্যবস্থা। এই কথাটি বুঝাতে পারলে অমুসলিমরাও ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য প্রত্যাশা করতে পারবে। চলুন, তাদের সাথে সম্পর্ক গড়ি, বন্ধু বানাই আর দাওয়াতের কাজের পথ প্রসার করি।আপনাদের ভাইমোঃ সিরাজুল ইসলাম(কেন্দ্রীয় সভাপতি) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

Design a site like this with WordPress.com
Get started